এমবেডেড কম্পিউটার ও দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার

তথ্য কণিকা

এমবেডেড কম্পিউটার (Embedded Computer)

  • কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার বৈশিষ্ট্য সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ যখন বিশেষ কোনো বৃহৎ ক্ষুদ্র যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনায় ব্যবহৃত হয় তখন ঐ হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বিত রূপকে বলে- এমবেডেড কম্পিউটার।
  • এমবেডেডের উদাহরণ হলো- একই মনিটরে একাধিক চ্যানেল উপভোগ করা।
  • বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেসি সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়- এমবেডেড কম্পিউটার।
  • এমবেডেড কম্পিউটার প্রথম ব্যবহৃত হয়- মহাশূন্য অভিযানে।
  • ১৯৬৮ সালের অ্যাপোলো-৭ ও ১৯৬৯ সালের অ্যাপোলো-১১ এর চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ লুনার মডিউল নিয়ন্ত্রিত ছিল- এমবেডেড কম্পিউটার দ্বারা।
  • এমবেডেড সিস্টেম জনপ্রিয় হবার কারণ- দামে সস্তা, আকারে ছোট, ওজন কম, বিদ্যুৎ খরচ কম (একটি ঘড়ির কয়েন ব্যাটারি দিয়েও চালানো সম্ভব) ও কর্মদক্ষতা বেশি।
  • এমবেডেড সিস্টেমের প্রোগ্রামিং করতে দরকার নেই- খুব দক্ষ প্রোগ্রামার হবার।
  • সাধারণত এমবেডেড সিস্টেমের কম্পিউটারের দায়িত্ব পালন করে থাকে- মাইক্রো-কন্ট্রোলার।
  • মাইক্রো-কন্ট্রোলার হলো- একটি মাইক্রোচিপ যার ভিতরে বিভিন্ন প্রোগামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে কাজ অনুযায়ী প্রোগ্রাম লিখে দেয়া যায়।
  • এমবেডেড সিস্টেমের মাইক্রোচিপের সাথে থাকে- কিছু পেরিফেরাল ডিভাইস (যেমন মোবাইলের ক্ষেত্রে কী- প্যাড/ ডিসপ্লে ইত্যাদি) এবং প্রোগ্রাম।
  • এমবেডেড সিস্টেমের প্রোগ্রামটিকে বলা হয়- ফার্মওয়‍্যার। অনেকে এটিকে এমবেডেড সফটওয়্যারও বলে থাকে।
  • আধুনিক সভ্যতায় ব্যবহৃত প্রযুক্তির একটি সমন্বিত রূপ হলো- এমবেডেড কম্পিউটার (Embedded Computer)।
  • এমবেডেড সিস্টেমের বহুল ব্যবহৃত উদাহরণগুলো হলো- বহনযোগ্য কম্পিউটার, পি.ডি.এ., এমপিথ্রি/ফোর প্লেয়ার, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম, মোটরগাড়ি, ওয়াশিং মেশিন, বৈদ্যুতিক ওভেন, ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, মডেম, সিকিউরিটি সিস্টেম, ভিডিও গেম কন্সোল, ATM, Printer, থার্মোস্ট্যাট ইত্যাদি।
  • Embedded System-এ ব্যবহৃত Hardware হলো- Micro chips, Integrated Circuit (IC) বা অন্য কোনো পেরিফেরাল ইন্টারফেস।
  • সাধারণত একটি মাইক্রোপ্রসেসর বোর্ড এবং প্রোগ্রামিং কাজের জন্য সমন্বিত ROM থাকে- Embedded System-এ।

দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার (Computer in Practical Field)

কৃষি

  • বর্তমানে উন্নত বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই কৃষিকাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে- কম্পিউটার।
  • ভালো জাতের বীজ, সার, কীটনাশক বাছাই করতে সহায়তা করে থাকে- কম্পিউটার।
  • কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করে- বীজ বপন, চারা রোপণ, ঔষধ দেয়া, ফসল কাটা, মাড়াই করা থেকে গুদামে তোলা পর্যন্ত ইত্যাদি কাজ।
  • নানা ধরনের কৃষিজাত পণ্যের তথ্য সরবরাহ করে- কম্পিউটার।
  • গ্রিন হাউসে ফসল, সবজি বা ফল চাষের উপযুক্ত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে- কম্পিউটার।
  • নানা ধরনের গবেষণা চালিয়ে উন্নত প্রজাতির চারা গাছ উৎপাদন সহজতর হচ্ছে- কম্পিউটারের মাধ্যমে।

যোগাযোগ

  • যোগাযোগ ব্যবস্থায় কম্পিউটার যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধন করেছে, যার ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে যোগাযোগ বা যাতায়াতের গতি।
  • আজ বিশ্বের যেকোনো স্থানে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে- ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে।
  • বিমানের টিকিট বুকিং, ফ্লাইট ও ট্রাফিক ব্যবস্থার সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হচ্ছে- কম্পিউটার।
  • টাইম টেবিল তৈরি, আসন সংরক্ষণ, কোন ট্রেন কোন লাইনে যাবে তা নির্ণয়, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে- কম্পিউটার।
  • নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থায় কম্পিউটারের মাধ্যমে করা যায়- মাল খালাস করা, মাল তোলা, কবে যাত্রা করবে, কবে পৌঁছাবে ইত্যাদি কাজ।
  • কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে- মহাশূন্যযান পাঠানো, নিয়ন্ত্রণ, চালানো ইত্যাদি কাজে।

শিক্ষা

  • শিক্ষা ব্যবস্থায় কম্পিউটারের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারগুলো হলো- শিক্ষাদান, শিক্ষার প্রশাসনিক তথ্য সংরক্ষণ, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন, পরীক্ষার ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ, যোগাযোগ স্থাপন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা, গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
  • ছাত্র-ছাত্রীদের মনোযোগ আকর্ষণ, আগ্রহ সৃষ্টি এবং পাঠ্য বিষয়কে মনে গেঁথে দেয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যমে হলো- কম্পিউটার।
  • কম্পিউটারের মাধ্যমে সহজেই সংরক্ষণ করা যায়- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের নাম ঠিকানা, বেতন ও চাকরি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য।
  • পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হয়- ওএমআর বা অপটিক্যাল মার্ক রিডার যন্ত্রের মাধ্যমে।
  • কম্পিউটারের মধ্যমে দ্রুত খুঁজে বের করা যায়- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারের বিভিন্ন বইয়ের নাম, লেখকের নাম, বিষয় ইত্যাদি উপাত্ত বা ডাটা।

স্বাস্থ্য

  • রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে- কম্পিউটারের ব্যবহার।
  • কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়- রোগের লক্ষণ নির্ণয়, ঔষধ নির্বাচন, স্বার্ধক্যের কারণ নির্ণয়, চক্ষু পরীক্ষা, প্যাথলজিক্যাল টেস্ট, রক্তের তালিকা প্রণয়ন, হাসপাতালের নার্স- ডাক্তারদের সময়সূচি ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
  • বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে গবেষণা চালানো হচ্ছে- ক্যান্সার, এইডস প্রভৃতির প্রতিষেধক তৈরির কাজে।
  • কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়- বায়োসেন্সর।
  • বায়োসেন্সরের প্রথম ধারণা দেন- অধ্যাপক ক্লার্ক (১৯৫৬ সালে)।
  • স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বোচ্চ প্রয়োগ হলো- টেলিমেডিসিন ও ই-হেলথ।

খেলাধুলা

  • বর্তমান সময়ে খেলাধুলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে- কম্পিউটার।
  • ভিডিও টেপ-এর প্রতিচ্ছবি স্থানান্তর করা যায়- কম্পিউটারের মাধ্যমে।
  • প্রতিটি খেলোয়ারের ভিডিও টেপ সংরক্ষণ করা হয়- কম্পিউটারের মাধ্যমে।
  • খেলাধুলায় প্রথম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়- ১৯৬০ সালে।

কর্মসংস্থান

  • কর্মসংস্থানের বিশাল বাজার উন্মুক্ত করেছে- কম্পিউটার তথা ইন্টারনেট প্রযুক্তি।
  • বিশ্বের যেকোনো জায়গায় অবস্থান করে অন্য দেশের কাজ করা যায়- ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
  • যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে তাদের বলে- ফ্রিল্যান্সার।
  • ইন্টারনেটের কর্মসংস্থানকে বলে- Virtual Employment World।
  • গ্লোবাল আউটসোর্সিং মার্কেট প্লেসগুলোর মধ্যে রয়েছে- odesk.com, upwork.com, freelancer.com, elance.com, guru.com, vieworker.com, rent-acoder.com ইত্যাদি।
  • বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল দেশের মধ্যে বিস্তৃত ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনকে বলে- ই-কমার্স (E-Commerce)।
  • ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয় করলে তাকে বলে- অনলাইন শপিং।

গবেষণা (Research)

  • গবেষণাক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তায়।
  • গবেষণার ক্ষেত্র সনাক্তকরণ, ডিজাইন ও বিশ্লেষণসহ এর প্রতিটি ধাপে ব্যাপক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগের ফলে।
  • গবেষণার জন্য বহুল ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিনসমূহ হলো- ieee.org, acm.org, google.com, msn.com ইত্যাদি।
  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে বিভিন্ন গবেষণাকর্ম পরিচালিত হচ্ছে- Distance Learning-এর মাধ্যমে।
  • গবেষণা কর্ম অতি সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে- তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে।

শিল্প

  • শিল্প ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে- তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে।
  • রাসায়নিক কারখানা, ইস্পাত প্ল্যান্ট ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের শিল্প ক্ষেত্রে প্রসেস কন্ট্রোল ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে।

বাসস্থান (Residence)

  • যেখানে রিমোট কন্ট্রোলিং বা প্রোগ্রামিং ডিভাইসের সাহায্যে যেকোনো স্থান থেকে কোনো বাড়ির সিকিউরিটি কন্ট্রোল সিস্টেম, হিটিং সিস্টেম, কুলিং সিস্টেম, লাইটিং সিস্টেম, বিনোদনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাকে বলে- স্মার্ট হোম (Smart Home)/Home automatic system।
  • ট্র্যাকিং এবং সেন্সিং টেকনোলজির মাধ্যমে ঘরের কোনো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস খুঁজে পাওয়া যায়- স্মার্ট হোমে (Smart Home)।
  • Smart Home System-এ নিয়ন্ত্রণ করা device গুলো হলো- TV, Light, Fans, AC, Washing Machine, Refrigerator, Microwave Oven, Fire System, Security Control System ইত্যাদি।

সংবাদ

  • যে কোনো প্রান্তের খবর মুহূর্তের মধ্যেই জানা যায়- তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে।
  • যে কোনো দেশের চ্যানেল, যে কোনো সময় দেখা যায়- কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে।
  • মুহূর্তের মধ্যেই যে কোনো সংবাদ জানা যায়- অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে।
  • সংবাদের অবাধ প্রবাহ সম্ভব হচ্ছে- মুক্ত সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে।

শিল্প সাহিত্য ও বিনোদনে

  • তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার- শিল্প সাহিত্যকে করে তুলেছে সমৃদ্ধশালী।
  • মানুষের বিনোদনের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে- তথ্য প্রযুক্তি।
  • আমরা ঘরে বসে বিভিন্ন দেশের গান, সিনেমা, অ্যানিমেশন উপভোগ করছি- কম্পিউটারের সাহায্যে।
  • বিশ্বের এক প্রান্তের বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগকে মুহূর্তের মধ্যে অন্য প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে- প্রযুক্তি।
  • বিশ্বের বিভিন্ন রকম মানুষের সাথে সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন হচ্ছে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সাহায্যে।

সংস্কৃতি বিনিময়

  • বিশ্বায়নের এই যুগে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জগতের কোনো সীমারেখা নেই- তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে।
  • আমাদের দেশে হলিউড বা বলিউডের প্রভাব বিস্তার করছে- তথ্য প্রযুক্তির কারণে।
  • দক্ষিণ কোরিয়ার গায়ক 'সাই'- এর গান ও নাচ, সব জায়গা ছড়িয়ে পড়েছে- তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে।
  • তথ্য প্রযুক্তির ফলে সম্ভব হয়- সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে সবার সাথে ভাবের আদান-প্রদান।

ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটি (Virtual Reality-VR)

  • বাস্তব চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনাকে বলে- ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটি (Virtual Reality-VR)।
  • ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটির উপাদানসমূহ হলো-
    • হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted Display-HMD)।
    • ডেটা গ্লোভ (Data Glove)।
    • একটি পূর্ণাঙ্গ বডি সুইট (Body Suit)।
    • রিয়েলিটি ইঞ্জিন ইত্যাদি।
    • উচ্চ মানের অডিও ব্যবস্থা।
  • Lively নামে ভার্চুয়‍্যাল চ্যাটিং সার্ভিস চালু করে- Google।
  • ভার্চুয়‍্যাল রিয়েলিটির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়- শিশু শিক্ষায়, ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ, কার ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ, বিমান চালনার প্রশিক্ষণ, মহাশূন্য অভিযানে, গেমস তৈরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

Start Practice Test