কম্পিউটার প্রজন্ম

তথ্য কণিকা

  • কম্পিউটারের প্রযুক্তিগত বিবর্তনকে বলে- কম্পিউটার প্রজন্ম। - B
  • কম্পিউটারের প্রজন্মগুলো হলো- প্রথম প্রজন্ম, দ্বিতীয় প্রজন্ম, তৃতীয় প্রজন্ম, চতুর্থ প্রজন্ম ও পঞ্চম প্রজন্ম।
  • বায়ুশূন্য ভালভ, ট্রানজিস্টর, আই-সি, মাইক্রোপ্রসেসর ইত্যাদি নির্দেশ করে- এক, একটি প্রজন্ম।
  • কম্পিউটারকে প্রজন্ম হিসেবে ভাগ করার প্রথা চালু হয়- IBM কোম্পানির একটি বিজ্ঞাপন থেকে।
  • কম্পিউটারের প্রজন্ম ভাগ করা হয়- এর যান্ত্রিক পরিবর্তন ও উন্নয়নের ভিত্তিতে।
  • বর্তমানে যে মাইক্রো কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে এগুলো মূলত- চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার।
  • চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য হলো- মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করবে এবং মানুষের কণ্ঠস্বরের নির্দেশ পালন করতে পারবে- পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার।

কম্পিউটারের প্রজন্ম ও তাদের বৈশিষ্ট্য

প্রজন্ম তথ্য
প্রথম প্রজন্ম (১৯৪৬-১৯৫৯) ১৯৪৫ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী নিডি ফরেস্ট বাল্ব আবিষ্কারের পরে প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের অসংখ্য ডায়োড, ট্রায়োড, বাল্ব, রেজিস্টার, ক্যাপাসিটর দিয়ে তৈরি হতো। তাই এই প্রজন্মের কম্পিউটার ছিল আকারে বৃহৎ।

বৈশিষ্ট্য:
  • ভ্যাকুয়াম টিউববিশিষ্ট ইলেকট্রনিক বর্তনীর বহুল ব্যবহার।
  • ইনপুট বা আউটপুট ব্যবস্থার জন্য পাঞ্চকার্ডের ব্যবহার।
  • বিশাল আকৃতির ও সহজে বহন অযোগ্য।
  • চুম্বকীয় ড্রাম মেমরির ব্যবহার।
  • অত্যধিক বিদ্যুৎ শক্তির খরচ ও স্বল্প গতিসম্পন্ন।
  • রক্ষণাবেক্ষণ ও উত্তাপ সমস্যা।
  • প্লাগবোর্ড দিয়ে প্রোগ্রাম।
  • সীমিত ডেটা ধারণ ক্ষমতা।
উদাহরণ: ENIAC, EDSAC, EDVAC, UNIVAC I, IBM 650, IBM 704, IBM 709, Mark II, Mark III ইত্যাদি।
দ্বিতীয় প্রজন্ম (১৯৫৯-১৯৬৫) কম্পিউটারে বান্ধের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের অবতারণা হয়। ফলে আকার, আকৃতি, কার্যক্ষমতা, পরিচালনা ইত্যাদিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।

বৈশিষ্ট্য:
  • ট্রানজিস্টরের ব্যবহার।
  • চুম্বকীয় কোর মেমোরির ব্যবহার ও ম্যাগনেটিক ডিস্কের উদ্ভব।
  • আকৃতির সংকোচন।
  • তাপ সমস্যার সমাধান।
  • উচ্চ গতিসম্পন্ন ইনপুট/আউটপুট সরঞ্জাম।
  • টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে ডেটা প্রেরণের ব্যবস্থা।
  • গতি ও নির্ভরযোগ্যতার উন্নতি।
উদহারণ: RCA 501, RCA 301, CDC 1604, NCR 300, GE 200, Honeywell 200, IBM 1400, IBM 1620, IBM 1600 ইত্যাদি। গ.
তৃতীয় প্রজন্ম(১৯৬৫-১৯৭১) কম্পিউটারে IC (Integrated Circuit) বা সমন্বিত চিপ ব্যবহারের মাধ্যমে তৃতীয় প্রজন্মের সূচনা হয়। এতে কম্পিউটারে আরো ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।

বৈশিষ্ট্য:
  • ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা IC ব্যবহৃত হতো।
  • অর্ধপরিবাহী মেমোরির উদ্ভব ও বিকাশ।
  • উচ্চতর ভাষার বহুল প্রচলন।
  • উন্নত কার্যকারিতা ও নির্ভরযোগ্যতা।
  • মিনি কম্পিউটারের প্রচলন।
  • ভিডিও মনিটর ও লাইন প্রিন্টারের প্রচলন এবং নির্বাহী পদ্ধতির উন্নয়ন।
উদাহরণ: IBM 360, IBM 370, PDP-8, PDP-11, GE 600 ইত্যাদি।
চতুর্থ প্রজন্ম (১৯৭১-বর্তমান) চতুর্থ প্রজন্মেই ঘটে কম্পিউটারের বিপ্লব। এ প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয় মাইক্রোপ্রসেসর, যেখানে ছোট একটি চিপে কয়েক লক্ষ ট্রানজিস্টর বসানো সম্ভব। বর্তমান কালের সকল কম্পিউটারই চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার।

বৈশিষ্ট্য:
  • মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রোকম্পিউটারের প্রসার ও প্রচলন।
  • বর্ধিত ডেটা ধারণক্ষমতা সম্পন্ন।
  • প্যাকেজ প্রোগ্রাম এর প্রচলন।
  • নির্ভরযোগ্যতার উন্নতি।
  • VLSI (Very Large Scale Integration) বা বৃহদাকার একীভূত বর্তনীর ব্যবহার।
উদাহরণ: IBM 3033, IBM 4341, TRS 80, Sharp PC-1211, HP 3000 ইত্যাদি।
পঞ্চম প্রজন্ম (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম) মূলত পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এখনো প্রচলন শুরু হয়নি। আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া এ প্রজন্মের কম্পিউটার আবিষ্কারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ কম্পিউটারের বিশেষত্ব হলো প্রতি সেকেন্ডে ১০ থেকে ১৫০ কোটি লজিক সিদ্ধান্ত দিতে পারবে এবং মানুষের কণ্ঠস্বরের নির্দেশ পালন ক্ষমতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পন্ন।

বৈশিষ্ট্য:
  • বহু মাইক্রোপ্রসেসর বিশিষ্ট একীভূত বর্তনী।
  • কৃত্রিম বুদ্ধির ব্যবহার।
  • কম্পিউটার বর্তনীতে অপটিক্যাল ফাইবারের (Optical Fiber) ব্যবহার।
  • প্রোগ্রাম সামগ্রীর উন্নয়ন।
  • অধিক শক্তিশালী মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রোকম্পিউটার।
  • বিপুল শক্তিসম্পন্ন সুপার কম্পিউটারের উন্নয়ন।
  • চৌম্বক বাবল মেমরির ব্যবহার, ডেটা স্টোরেজের ব্যাপক সম্প্রসারণ।
  • স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ, শ্রবণযোগ্য শব্দ দিয়ে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ।
  • কণ্ঠস্বর শনাক্তকরণ ও বিশ্বের সকল ভাষায় কম্পিউটিং।

Start Practice Test